তিন বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যগণ তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে জুলাই বিপ্লবের পর থেকে। কিন্ত তাদের দাবির সপক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তাদের দাবি না মানলে লং মার্চ টু জাহাঙ্গীর গেট এর ঘোষণা দেন।

সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যগণ ৪ দফা দাবিতে রবিবার (১৮/০৫/২০২৫ইং) বাংলাদেশ সহযোদ্ধা প্লাটফর্মের (বিসিপি) ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যদের ৪ দফা দাবি-
(১) চাকরিচ্যুতির সময় থেকে এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা এবং চাকরি পুনর্বহাল করতে হবে;
(২) সশস্ত্র বাহিনীর কোনও সদস্যকে চাকরিতে পুর্নবহাল করা সম্ভব না হলে তাকে সরকারি সব সুযোগ-সুবিধাসহ সম্পূর্ণ পেনশনের আওতাভুক্ত করতে হবে;
(৩) সশস্ত্র বাহিনীর বিদ্যমান বিচার ব্যবস্থা ও সংবিধানের আর্টিকেল-৪৫ সংস্কার করতে হবে; এবং
(৪) শনিবার (১৭ মে) গ্রেফতার হওয়া সহযোদ্ধা প্লাটফর্মের প্রধান সমন্বয়ক এবং বরখাস্ত সৈনিক নাইমুল ইসলামকে মুক্তি দিতে হবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত চাকরিচ্যুত সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত সৈনিক মো. রিপন হোসেন বলেন, তিন বাহিনী মিলিয়ে প্রায় ৬০০ জনের মতো ব্যক্তিকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আরও অনেককে বাধ্যতামূলক পেনশনে পাঠানো হয়েছে এবং অনেককে কোর্ট মার্শাল করে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এসব চাকরিচ্যুতি অন্যায়ভাবে করা হয়েছে। আমরা এটা তারা মানেন না।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে নৌবাহিনীর একজন নাবিক এম বাহাউদ্দিন বলেন, আমরা ৪৫ মিনিট সময় দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবির বিষয়ে আলোচনা করার জন্য ক্যান্টনমেন্ট থেকে যদি কেউ না আসে তাহলে ৪৫ মিনিট পর আমরা জাহাঙ্গীরগেটের উদ্দেশ্যে লংমার্চ শুরু করবো। এছাড়া আমাদের প্রধান সমন্বয়ক নাইমুল ইসলামকে মুক্ত করতে হবে।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর একটি দল অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রেসক্লাবে আসলে আন্দোলনকারীদের সাথে দীর্ঘ আলোচনা হয়। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা সেনা বাহিনীর গাড়ি আটকিয়ে আল্টিমেটাম দেয় যে, গ্রেফতারকৃত সমন্বয়ক সৈনিক নাইমুল ইসলামকে প্রেসক্লাবে হাজির করা না হলে তারা গাড়ি ছাড়বে না। এ সময় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়।
পরিশেষে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়।