পিলখানা হত্যাকাণ্ড দিবসে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান কড়া ভাষায় একটি বক্তব্য প্রদান করেন। এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে হাসনাত, সারজিস ও সেনা প্রধান এর মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকের আলোচনাকে কেন্দ্র করে এক রাজনৈতিক ঝড়ের সৃষ্টি হয় দেশজুড়ে। উক্ত বিষয়ের আসল রহস্য ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করা হলো-
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (পিলখানা হত্যাকাণ্ড দিবস)-
পিলখানা হত্যাকাণ্ড দিবসে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান অনেক কড়া ভাষায় বক্তব্য দিয়েছিলেন, এবং বলেছিলেন “এনাফ ইজ এনাফ”।
এরপর সারজিস আলম সেনাপ্রধানের মিলিটারি এডভাইসরকে জিজ্ঞাসা করে, আপনাদের দৃষ্টিতে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু দেখছেন কিনা? সেনাপ্রধানের বক্তব্য তুলনামূলক straight-forward এবং harsh মনে হচ্ছে। তিনি সারজিসকে বললেন তোমরা কি এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে চাও? সারজিস তখন বলেছিল- বলা যেতে পারে। এরপরে সেদিন সেনাপ্রধানের সাথে তাদের সাক্ষাৎ হয়। সেনাভবনে সেই রুমে তারা তিনজনই ছিল। সেনাপ্রধান, হাসনাত এবং সারজিস।
[সূত্র- Md Sarjis Alam এর ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে ২৩ মার্চ এর স্ট্যাটাস]
১১ই মার্চ,সময় দুপুর ২:৩০-
সেনাপ্রধান, হাসনাত এবং সারজিস এর মধ্যে মিটিং এ আলোচনার মূল বিষয় সমূহ-
মিটিং এ উপস্থিত ছিল-
সেনাপ্রধান, হাসনাত এবং সারজিস।
সেনাপ্রধানের প্রস্তাব-
(১) আসন সমঝতার বিনিময়ে আমরা যেন এই প্রস্তাব মেনে নিই।আমাদেরকে বলা হয়- ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে – তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে।
(২) একটি বিরোধী দল থাকার চেয়ে একটি দুর্বল আওয়ামী লীগসহ একাধিক বিরোধী দল থাকা না-কি ভালো।
(৩) রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ যাদের দিয়ে করা হবে, তারা এপ্রিল-মে থেকে শেখ পরিবারের অপরাধ স্বীকার করবে, হাসিনাকে অস্বীকার করবে এবং তারা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করবে এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে।
(৪) আওয়ামী লীগকে ফিরতে কোন ধরণের বাধা দিলে দেশে যে সংকট সৃষ্টি হবে, তার দায়ভার আমাদের নিতে হবে এবং ‘আওয়ামী লীগ মাস্ট কাম ব্যাক’।
(৫) রেগে গিয়ে উত্তর দেন,’ ইউ পিপল নো নাথিং। ইউ ল্যাক উইজডোম এন্ড এক্সপিরিয়েন্স। উই আর ইন দিজ সার্ভিস ফর এটলিস্ট ফোর্টি ইয়ার্স। তোমার বয়সের থেকে বেশি। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ছাড়া ‘ইনক্লুসিভ’ ইলেকশন হবে না।’
[সূত্র- Hasnat Abdullah এর ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে ২১ মার্চ এর স্ট্যাটাস]
(১) ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’
(২) সাবের হোসেন, শিরিন শারমিন চৌধুরী, সোহেল তাজ;
(৩) আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে কি না,
(৪) এই ইলেকশনে আওয়ামী লীগ থাকলে কী হবে না থাকলে কী হবে,
(৫) আওয়ামী লীগ এই ইলেকশন না করলে কবে ফিরে আসতে পারে কিংবা আদৌ আসবে কি না,
(৬) এসব সমীকরণে দেশের উপরে কী প্রভাব পড়তে পারে, স্থিতিশীলতা কিংবা অস্থিতিশীলতা কোন পর্যায়ে যেতে পারে।
[সূত্র- Md Sarjis Alam এর ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে ২৩ মার্চ এর স্ট্যাটাস]
হাসনাতের মতামত-
(১) ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে।
(২) সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন, তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।
(৩) আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে কাজ করুন।
(৪) আওয়ামীলীগের সাথে কোন ইনক্লুসিভিটি হতে পারে না।আওয়ামীলীগকে ফেরাতে হলে আমাদের লাশের উপর দিয়ে ফেরাতে হবে। আওয়ামী লীগ ফেরানোর চেষ্টা করা হলে যে সংকট তৈরি হবে, তার দায়ভার আপনাদের নিতে হবে’।
সারজিসের মতামত-
(১) আমার জায়গা থেকে আমি সেদিনের বক্তব্যকে সরাসরি ‘প্রস্তাব’ দেয়ার আঙ্গিকে দেখিনা।
(২) বরং ‘সরাসরি অভিমত প্রকাশের’ মতো করে দেখি।
(৩) স্ট্যাটাসের শেষে সারজিস আলম বলেন, জুলাই গণহত্যা, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড ঘটানো ‘আওয়ামী লীগের যেকোনো ভার্সনের’ বাংলাদেশের রাজনীতিতে আসার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।