পাঁচটি ক্ষেত্রে সংস্কারের পর নির্বাচন: কূটনীতিকদের বলেছেন ড. ইউনূস

পাঁচটি ক্ষেত্রে সংস্কারের পর নির্বাচন: কূটনীতিকদের বলেছেন ড. ইউনূস

 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস রোববার (১৮ আগস্ট ২০২৪ ইং) বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার চেষ্টায় দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে।

 

তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তার স্বৈরাচারী শাসনের কারণে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। বিচার বিভাগ ভেঙ্গে পড়েছে। দেড় দশকের নৃশংস দমন-পীড়নের মাধ্যমে সব গণতান্ত্রিক অধিকারকে চাপা দেওয়া হয়েছে।” রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিকদের ব্রিফিং করেন।

 

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে এটি ছিল প্রধান উপদেষ্টার প্রথম ব্রিফিং।

 

ইউনূস কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমি এমন একটি দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি যেটি নানাভাবে সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলার মধ্যে ছিল। ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার চেষ্টায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে।”

 

“নির্বাচনে নির্লজ্জভাবে কারচুপি করা হয়েছে। তরুণদের বেশ কয়েকটি প্রজন্ম তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ না করেই বড় হয়েছে। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাংক লুট হয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার লুণ্ঠন করা হয়েছে,” তিনি বলেন।

 

বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ডক্টর ইউনূস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলেছেন যে অন্তর্বর্তী সরকার “গভীর সংস্কার” সম্পন্ন হলে শীঘ্রই অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

 

তিনি বলেন, “আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে ন্যূনতম পাঁচটি ক্ষেত্রে গভীর সংস্কার করা হবে। এগুলো হলো নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, বেসামরিক প্রশাসন, নিরাপত্তা সংস্থা এবং গণমাধ্যমের সংস্কার।”

 

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন যে তিনি শিক্ষার্থীদের অনুরোধে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

 

শিক্ষার্থীদের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আমাদের সাম্প্রতিক স্মৃতিতে অন্য কোনো দেশের শিক্ষার্থীদের তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খা প্রকাশের জন্য এত মূল্য দিতে হয়নি, একটি বৈষম্যমুক্ত, ন্যায়সঙ্গত ও পরিবেশবান্ধব জাতির স্বপ্ন দেখা যেখানে প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার সম্পূর্ণ সুরক্ষিত।”

 

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে, ডঃ ইউনূস সেই সমস্ত বীর ছাত্র এবং মানুষদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান নিবেদন করেন যারা সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানের সময় সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছিলেন।

 

দুপুর ১ টার দিকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ব্রিফিং শুরু হয়। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

 

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিকদের প্রধান উপদেষ্টার এটিই প্রথম ব্রিফিং।

 

জাতিসংঘ সংস্থার প্রতিনিধিসহ ৫০ জনেরও বেশি কূটনীতিক ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা কূটনীতিকদের শুভেচ্ছা জানান।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *